নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী মহানগরীতে একজন স্কুল শিক্ষককে পরিকল্পিতভাবে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে, ঘরে ঢুকিয়ে উলঙ্গ করে তা মোবাইলে ধারণ করে মুক্তিপণ আদায় ও চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে আরএমপি’র এয়ারপোর্ট থানাধীন বায়া পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল রাসেদুল খাঁনের বিরুদ্ধে।
গত ৫ মার্চ নগরীর দাশপুকুর এলাকায় একটি বাসায় ঐ শিক্ষকের উলঙ্গ ভিডিও ধারণ ব্লাকমেইল করে এএসআই মোতালেব নামের পরিচয় বহনকারী একজন ও কনস্টেবল রাসেদুল খান।
জানা গেছে, ঐ নারীর সঙ্গে জোর করে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কনস্টেবল রাসেদুল খানসহ চক্রটি ওই ভুক্তভোগীদের থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করেছে এবং প্রতিনিয়তই ভিডিও ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে আসছে চক্রটি।
ভুক্তোভোগী স্কুল শিক্ষক বলেন, নারীদেরকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে অপহরণ করে মুক্তিপণ বাবদ বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো তারা। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় সে শিক্ষক আইনের আশ্রয়ও গ্রহণ করতে পারিনি।
ঘটনার বরাতে ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষক এ বিষয়ে বলেন, সুমন নামের একজন যুবকের সাথে মুঠোফোনে তার সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে গত ৫ মার্চ সকালে অপরিচিত একটি নাম্বর থেকে ফোন আসে একজন মহিলার এবং বলে আপনার নাম্বার সুমন ভাই আমাকে দিয়েছে। আপনি আমার সাথে দেখা করেন, সে শিক্ষকে ফোন করে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন সোনাদিগি মোড় এলাকায় আসতে বললে সেখানে সে আসে। এরপর শিক্ষকে নিয়ে মহিলাটি রিক্সাযোগে রাজপাড়া থানাধীন দাশপুকুর এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাসায় নিয়ে একটি রুমে ঢুকিয়ে মহিলাটি রুমের দরজা আটকিয়ে দেয় ও জোর করে সে স্কুল শিক্ষকের পোশাক খুলে নেয়। কিছুক্ষণ পর রুমের দরজা বাহির থেকে নক করলে সেই মহিলাটি রুমের দরজা খুললেই ২ জন পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে। তাদের মধ্যে এক জন পোশাক পড়া ছিলো, আরেকজন সিভিলে ছিলো। তারা রুমের ভিতর প্রবেশ করে সেই স্কুল শিক্ষকের পোশাক খুলে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে থাকে। ভিডিও ফুটেজ ধারণ করেন বায়া ফাঁড়ি কনস্টেবল রাসেদুল খান সহ তার সাথে থাকা এএসআই পরিচয় প্রদানকারী মোতালেব।
এ সময় তারা ৪ লক্ষ টাকা না দিলে পরিবার সহ সোস্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে সে স্কুল শিক্ষক মুঠোফোনে তার অন্য সহকর্মীকে বিষয়টি জানালে সে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দেয় ও ভিকটিমের সাথে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা জোর করে নিয়ে নেয় চক্রটি।
এ বিষয়ে জানতে এয়ারপোর্টে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইমরান হোসেনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, ঘটনার বিষয় আমি কিছুই জানি না। কেউ অভিযোগ করেনি। তবে এমন কোন ঘটনা ঘটলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন যাবৎ কনস্টেবল রাসেদসহ একটি চক্র খারাপ মেয়েদের দিয়ে সমাজের বৃত্তবানদের ব্লাকমেইল করে আসছে। লোকলজ্জায় কেউ কোথাও অভিযোগ বা মুখ খুলছে না।
এবার ঐ শিক্ষক আত্মসম্মানের ভয়ে এবং বারবার ব্লাকমেইল হওয়া থেকে বাঁচতে সাংবাদিকের সাহায্য কামনা করেন। গোপনে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিবেন বলেও জানান।