নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘আমি ট্যাক্স দিই। আমার টাকায় ফুটপাত বানানো হয়। কিন্তু আমি ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সুযোগ পাই না। শুধু ব্যবসায়ীরাই ফুটপাত দখল করে থাকে। এতে কি আমার অধিকার ক্ষুণ্ন হয় না?’ রাজশাহীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় গত ১৫ মার্চ এভাবেই একজন প্রশ্ন করেছিলেন। সভায় বিভাগীয় কমিশনার কিংবা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।
তবে এই ব্যক্তির প্রশ্নের যৌক্তিকতা আছে। কারণ, রাজশাহী শহরের সবখানেই এখন টাইলস বসানো দৃষ্টিনন্দন ফুটপাত করা হচ্ছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর সেই ফুটপাত কার আর মানুষের হাঁটাচলার জন্য উন্মুক্ত থাকছে না। হকার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নিজেদের প্রয়োজনে ফুটপাত দখল করে নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, শহরের কয়েকটি জায়গায় ফুটপাত দখল করে স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক দল ও অঙ্গ-সংগঠনের কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে ফুটপাতে। শহর ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
রাজশাহী নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার রেলগেট থেকে আম চত্বর পর্যন্ত বালি খোয়া রাস্তায় রেখে দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করছেন এলাকার কিছু প্রভাবশালী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দু’পাশে সব ফুটপাতই দখলে রেখেছেন শুধু ব্যবসায়ী নয় কিছু ডেভলপার ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তাও দখল করেছেন কেউ কেউ। শিরোইল এলাকায় ফুটপাতের ওপর গড়ে উঠেছে পুরাতন জুতার দোকান, পুরাতন কাপড়ের দোকান, ফলের দোকান এবং চায়ের দোকান। এখানে ফুটপাত দখল করে ট্রাফিক পুলিশের একটি অস্থায়ী চৌকিও স্থাপন করা হয়েছে।
নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে ফুটপাতের ওপরেই করা হয়েছে ট্রাফিক পুলিশের একটি স্থায়ী চৌকি। সেখানে স্থায়ী ট্রাফিক অফিস করতে এখন কাজ চলছে। নগরীর ব্যস্ততম এই এলাকায় পথচারীদের জন্য একটুও ফুটপাত উন্মুক্ত নেই। এই ফুটপাত দখল নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে একরকম প্রতিযোগিতা চলে। এই প্রতিযোগিতার চলে সামনে ফুটপাত দখলকে কেন্দ্র করে খুনাখুনি হয় এমনও হয়েছে সেখানে ফুটপাত দখল করে গড়ে তুলেছেন দোকান। এলাকার আরও কয়েক যুবক তাদের দোকান তুলে দিয়ে নিজেরা দোকান দিতে চেয়েছিলেন। এ জন্য অনেক মানুষের সামনেই প্রকাশ্যে দোকানে মাদক কেনাবেচা করা হয়। এতে যুব সমাজ ক্ষতির আকাঙ্ক্ষা থেকেই যায়
শহরের বেশ কিছু এলাকায় ফুটপাত দখলমুক্ত করতে মাঝে মাঝে অভিযান চালায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। তাতে লাভ খুব একটা হয় না। উচ্ছেদের দু’একদিন পরই আবার ফুটপাত দখল হয়ে যায়। ফুটপাত নিয়ে খুনোখুনির হয়েথাকে এতে অসাধারণ ফুটপাত দখল কারীদের , ‘ফুটপাত দখলমুক্ত করে বিদেশের মত কিছু সড়ক ও মোড়ে সাপ্তাহিক ওপেন মার্কেট করা যায়।’তাহলে
ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝেই ফুটপাত দখলমুক্ত করতে যায়। তখন লোকজন বলে, আমরা নাকি গরীবের পেটে লাথি মারছি। আমরা গেলে তারা সরে যায়, চলে এলে আবার বসে যায়। একরকম চোর পুলিশ খেলা চলে। শহরটা তো আমাদের সবার। একে সুন্দর রাখা আমাদের সবারই দায়িত্ব।’ তিনি জানান, ফুটপাত দখলকে কেন্দ্র করে এলাকার সব ব্যবসায়ীকে ফুটপাত ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা স্বেচ্ছায় সরে না গেলে অচিরেই ব্যবস্থা নিবে