রাজশাহী প্রতিনিধি:রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেল স্টেশন এলাকায় আশিক বাহিনীর আতংকে সহপরিবারে গৃহবন্দী আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রহমান। এমনই অভিযোগ করেন তিনি। আড়ানী পৌরসভার নুরনগর গ্রামের মৃত ওবাইদুল রহমানের ছেলে বজলুর রহমান আর্তনাদ করে বলে প্রথমে হত্যার চেষ্টা, পুকুরে বিষ প্রয়োগ, চাঁদা দিতে অস্বীকার করাই মারপিটের শিকার, মিথ্যা ষড়যন্ত্র করে মামলায় ফাশানোর চেষ্টা ছাড়াও বিভিন্ন সময় তো হুমকি প্রদান আছেই, আর কত নির্যাতনের শিকার হতে হবে আমাকে! এখন কি আশিক বাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে সহপরিবারে আমাকে আত্মহত্যা করতে হবে! স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানাযায়, আড়ানী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড নুরনগর গ্রামের নাসির আলীর ছেলে আশিক। জমি নিয়ে বিরধ হয় অনেক আগে একই এলাকার ওবাইদুল রহমানের ছেলে বজলুর । সেই শত্রুতার জেরে গত আড়ানী পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা চলাকামিন সময়ে বজলুকে হত্যার চেষ্টা চালায় আশিক ও তার নিজস্ব বাহিনী। এতে অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে ফিরে বজলু।
তবে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। এখন সে প্রায় পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছে। বর্তমানে এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলমান। এরপর বজলুর চাষকৃত পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় আট লক্ষ টাকার ক্ষতি করে রাতের আঁধারে। এরপর সম্প্রতি আশিক চাঁদা দাবি করে বজলুর কাছে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বাড়িতে গিয়ে মারপিট করে আশিক ও তার লোকজন। এ বিষয়ে বজলু আশিকের বিরুদ্ধে বাঘা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আড়ানী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ থানায় বসে তাদের বিষয় টা সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করে দেয়। এদিকে আবারও গত রোববার দুপুরে আশিক তার বাহিনী নজরুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, জুয়েল ও তার সাত মাসের গর্ভবতী স্ত্রী মুন্নি, মানোয়ার, আমিরুল কে মারপিট করে গুরুতর ভাবে আহত করে এবং বজলুকে না পেয়ে তার বাড়ির সিসি ক্যামেরা, জানালার প্লাস, বৈদ্যুতিক মিটার সহ বাহিরে থাকা অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
এছাড়াও আশিক বাহিনীর ভয়ে একজন এইস এস সি পরিক্ষার্থী সহ ১০ /১৫ জন নিজ বাড়ি ছাড়া অন্যত্র পালিয়ে রয়েছে । এবিষয়ে আহত নজরুল জানান , দুপুর আড়াইটার দিকে আমি দোকানে শুয়ে ছিলাম এমন সময় দরোজা তে বিকট শব্দ হলো। এর পর আশিক দলবল নিয়ে আমাকে মারধর শুরু করে এবং প্রশ্ন করে বজলু কোথায় বল, না হলে বজলু সহ তোদের সবাই কে মেরে ফেলবো। এমন সময় আশিকের পাশ থেকে তাকে একজন কি বললো আর তারা চলে গেল,কয়েক মিনিট পর আবার এসে আমাকে মারপিট শুরু করলো। অপর এক আহত সবজি ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি ঝিনা বাজারে সবজি বিক্রয় করতে গিয়েছিলাম। বেলা সাড়ে চারটার দিকে তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে আশিক সে খানে যায় এবং আমাকে মারপিট করতে শুরু করে। আমি বারবার আমার অপরাধ কি জিজ্ঞাসা করি সে বলে তোর অপরাধ বজলুর মেয়ের জামায় রিয়নের ভাই তুই। আহত জুয়েল ও তার স্ত্রী জানান, আমি একজন কলা ব্যবসায়ী। দুপুরে বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম।
এমন সময় আশিক আমার নাম ধরে ডাকতে থাকে, আমি কে বলে মাথা বের করলে তারা ঘরে ঢুকে আমাকে টেনে হিস্রে বাহিরে বের করে মারপিট শুরু করে এবং বজলু কোথায় জিজ্ঞাসা করতে থাকে এবং বজলুর সাথে চললে এবার তোকে মেরে ফেলবো বলে হুমকি দিতে থাকে। এসময় আমার সাত মাসের গর্ভবতী স্ত্রী তাদের বাধা দিতে গেলে তারা তাকেও মারপিট করে। আহত মনোয়ার জানান, আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা।
সেই ভাতার টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাড়ি আসছি। এমন সময় আড়ানী রেল স্টেশনে আশিক আমাকে ডাকে এবং আমার ফোন চাই। আমি ফোন ব্যবহার করিনা বললে সে আমাকে চলে যেতে বলে। আমি সামনের দিকে আগাতেই পিছন থেকে তারা কয়েকজন আমাকে হামলা করে এবং মেরে গুরুতর ভাবে আহত করে। আহত হয়েও আমি কোন প্রকার চিকিৎসা নিতে পারিনাই কারণ আমার চিকিৎসা করানোর মতো সমর্থনে বলে কেঁদে ফেলেন। আশিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা পালাতক থাকায় এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বজলুর রহমান এ বিষয়ে প্রতিবেদককে জানান, আমার কোন পুত্র সন্তান নেই, চারটি মেয়ে। আশিক ও তার লোকজনের ভয়ে আমি বাড়ি থেকে বেরহতে পারছিনা, আমার তিনটি মেয়ে কয়েক দিন থেকে স্কুলে যাইনা ভয়ে। এছাড়াও ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় ফাসানোর চেষ্টা করছে তারা। এই বিষয় গুলো নিয়ে আমি সহ আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এর সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি নিরাপত্তা চেয়ে চারঘাট- বাঘার অভিভাবক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপি স্যার, রাজশাহী জেলা পুলিশের মাননীয় পুলিশ সুপার স্যার, বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ স্যারের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এ ব্যাপারে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ খায়রুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সাথে অভিযুক্ত দের আটকের চেষ্টা চলছে।