নিজস্ব প্রতিবেদক :নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত “র”-এর এজেন্ট কামরুজ্জামান। তারপরও নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে সরকারি চাকরিতে। সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, স্বৈরাচার সরকার হাসিনা পতনের পরও কোন ক্ষমতাবলে বহাল তবিয়তে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে এই কামরুজ্জামান! কেন এই দুর্নীতিবাজ, নারীবাজ, অর্থপাচারকারীকে পদত্যাগ ও আইনের আওতায় নেয়া হবে না?
গোপনতথ্য কি বলছে আসুন দেখে নিই। সরকারি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। কামরুজ্জামান চাকরি করতো সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে। পদ পদবি ছিল মেইনটেইন্স ইঞ্জিনিয়ার। র এর এজেন্ট হওয়া সত্ত্বেও এক বিশেষ বলে চাকরি পায়। যেগুলোর প্রমাণ এসেছে গণমাধ্যমকর্মীদের অনুসন্ধানে।
জানা গেছে, প্রটোকল মেইনটেইন না করেই বসের ওপরের বসের সান্নিধ্য পেয়ে যেতো। মেকানিজমে চলতো চাকরি, অবৈধ উপার্জন সেই সাথে কানাডায় রক্ষিতা’র একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতো। ছাত্র জনতার বিপ্লবে স্বৈরাচার হাসিনা পতনের পর ভোল পাল্টিয়েছে কামরুজ্জামান। গোপন সূত্র বলছে, জিম্মি করেই কোটি কোটি টাকার মালিক কামরুজ্জামান। এমনকি সে একজন “র”-এর এজেন্ট।
গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য অনুসন্ধানে উঠে আসে কামরুজ্জামানের ধূর্ততার সাথে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের চিত্র।
র’তে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে নিয়োগ কিভাবে হয় : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে এখনো বহাল তবিয়তে র এজেন্ট কামরুজ্জামান। ২০১৭ সালে ৭১ টিভির ব্রডকাস্টিং ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান সাংবাদিক ফারজানা রুপার সরাসরি হস্তক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গ্রেড ৬ এর সিস্টেম ইন্জিনিয়ার পদে চাকুরি পায়। ২০১৮ সালে ভারতে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে উচ্চতর পড়াশুনা করতে দিয়ে ভারতের র এর এজেন্ট নিযুক্ত হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রতিটি কম্পিউটারের ডাটা বেইজে একসেস ছিলো। সে প্রতিদিন তথ্য সরবরাহ করতো র এর কাছে। আর এখনও সরকারি কোয়ার্টারে বউ বাচ্চা নিয়ে সুবিধা ভোগ করছে বহাল তবিয়তে।
কামরুজ্জামানের পারিবারিক তথ্য ও রক্ষিতার সূত্র অনুযায়ী, ২০১২- ২০১৪ পর্যন্ত একাত্তর টেলিভিশনে চাকরি করতো। সেখানে চাকরি ছাড়ার পর কামরুজ্জামান মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি পায়।
নিরাপত্তার স্বার্থে নাম গোপন রাখার শর্তে এক অরগানাইজেশান পক্ষ জানায়, টেন্ডার বা প্রজেক্টগুলো কামরুজ্জামানের কাছে যেন হাতের মোয়া। তাঁর সিস্টেমটা ছিল প্রটোকল মেইনটেইন না করেই উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতো। এরপর থেকে তার সিনিয়র বা সহকর্মীদের বিষয় মাথায় রাখতো না। কেউ তার অনিয়ম সম্পর্কে কথা বললেই বলতো, ডিবি হারুনকে ডাকবো! আবার অনেক সময় বিষয়টি উঠে এসেছে, সে একজন র এর এজেন্ট। সেই ক্ষেত্র দেখিয়েও ক্ষমতাবলে টেন্ডার যাকে খুশি তাকে দিতো। আর সেই কাজ নিজেদের কোম্পানি নিজেদের অরগানাইজেশান দিয়েই করতো। আবার একই অরগানাইজেশান দিয়ে করতো না। একটা কোম্পানির মাধ্যমে প্রায় ৭/৮ টা অরগানাইজেশান করা হতো। একেকটা অরগানাইজেশানকে একেক সময় প্রজেক্টগুলো দিতো। যদি ৫০ লক্ষ টাকার কাজ হয় তাহলে, ৩৫ বা ৫০ হাজার টাকা প্রজেক্ট সম্পূর্ণ করা ব্যক্তিকে দিতো বাকি টাকা সে নিতো। বাকি টাকা কামরুজ্জামান আত্মসাৎ করতো। মুখ খুলে না কেউ। মুখ খুললেই ডিবি হারুনের সাথে উঠানো ছবি দেখিয়ে ভয় দেখাতো।
কামরুজ্জামান কিভাবে আর্থিক লেনদেন করতো এবং কি করতো এত টাকা! এত টাকা কারও একাউন্টে নেয়া হয়। সেখান থেকে সে টাকা হাতে নিতো। এরপর টাকাগুলো কানাডার ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করেন। কিন্তু নিজের একাউন্টে নিতো না। তাহলে একাউন্টটি কার! একাউন্টটি কামরুজ্জামানের রক্ষিতার।
কেনো এখনও গোপন!- এমন প্রশ্নে প্রতারিত, নির্যাতিতরা বলেন, এখনও আমরা ভয়ে আছি। কেননা এখন কামরুজ্জামান নিজেকে বিএনপি দলকে ম্যানেজ করবে। সে হুমকি দিচ্ছে আমি কার্যালয়ে আবার জায়গা নেব। হারুনের অভাব নেই। তোদের মত লোকদের যখন তখন নাই করে দিতে পারি বলেও হুমকি দিচ্ছে।