মো: মিজানুর রহমান মিন্টু, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পঞ্চগড়ে যুবদল ও ছাত্রদলের মশালমিছিল থেকে জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের আটজন নেতা-কর্মী পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসর জন্য রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চগড় জেলা শহরের ইসলামবাগ এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে রহমানিয়া হোটেলের সামনে ,গতকাল বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে যুবদল নেতাদের দাবি, তাঁরা হামলা চালাননি। জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলের ওপর প্রথমে ইটপাটকেল ছুড়লে তাঁদেরও কিছু নেতা-কর্মী পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়ে সেখান থেকে চলে যান।
হাসপাতালে ভর্তি আহত ব্যক্তিরা হলেন,সদর উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বাবু (৩৮) সদর উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী (৩৮)
সহসভাপতি আশরাফুজ্জান রতন (৪২), মাগুরা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. রাজু (৩৪), সাতমেড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি জুয়েল ইসলাম (৩২), সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আলাল হোসেন (৩২), গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি বজলার রহমান (৪২) ও কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সদস্য শাহ আলম (৩৫)। তাঁদের মধ্যে জুয়েল ইসলামকে রাতেই রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, আহত নেতা-কর্মী ও স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যার পর যুবদল-ছাত্রদলের ৩০–৪০ জন নেতা–কর্মী পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে মশাল জ্বালিয়ে মিছিল বের করে। একই সময় তফসিল ঘোষণা উপলক্ষে আনন্দমিছিল বের করার জন্য জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা সেখানে জড়ো হচ্ছিলেন। মশালমিছিল থেকে বিক্ষোভাকারীরা তাঁদের সামনে পড়া কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের চেষ্টা করলে জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা-কর্মীরা এগিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত হলে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ ঘটনার পরপরই জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে একটি মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের টহল বেড়ে যায়। মুহূর্তেই পঞ্চগড় বাজারের অধিকাংশ দোকান পাঠ বন্ধ হয়ে যায়। পরে শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরঙ্গী মোড় ও জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা। রাতেই পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেতা-কর্মীদের দেখতে যান এবং আর্থিক সহায়তা করেন।
এ ঘটনায় রাতেই জাতীয় শ্রমিক লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মোঃ শাহীন রেজা মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো.নুরুজ্জামান ২৪ জনে নাম উল্লেখ করে ৮০ থেকে ৯০ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
আহত শ্রমিক লীগ নেতা মো. লোকমান হোসেন বাবু বলেন, তফসিল ঘোষণা উপলক্ষে আনন্দ মিছিলের জন্য আমরা শহরের রহমানিয়া হোটেলের পাশে জড়ো হচ্ছিলাম। এ সময় যুবদল-ছাত্রদলের একদল বিক্ষোভকারী মশাল মিছিল নিয়ে বের হয়ে গাড়ি ভাঙচুর করছিল। এসময় আমি সহ আমাদের নেতা–কর্মীরা এগিয়ে গেলে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। এ ঘটনায় আমাদের আটজন নেতা-কর্মী এখনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।