নিজস্ব সংবাদ দাতাঃ নেত্রকোনা জেলা বিএডিসি(ধান)বীজ উৎপাদনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ নেত্রকোনা বিএডিসি (বীউ)র উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে। অর্থের বিনিময় নিম্নমানের বীজ সংগ্রহ। চিটাসহ বীজ সংরক্ষণ করায় বীজের বস্তায় পোকায় আক্রমণের কারণে গুদামেই নষ্ট হতে চলছে সরকারের মূল্যবান কোটি কোটি টাকার ধান বীজ। আগামী বোরো মৌসুমে বীজ সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেত্রকোনা জেলায়।
নেত্রকোনার মাটি ধান উৎপাদনে সমৃদ্ধ। এ জেলার বোরো উৎপাদন দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। ভালো মানের বীজ উৎপাদন ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে সরবরাহ করার মাধ্যমে কৃষির সর্বাধিক উন্নয়ন তথা কৃষকের আর্থসামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের ঘোষিত ক্ষুধা মুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও নেত্রকোনা বিএডিসি (বীউ)র উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীনের মতো কিছু সরকারি অসৎ কর্মকর্তার জন্য ভেস্তে যাচ্ছে সরকারে উন্নয়ন কর্মকান্ড।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং নিয়মিত ইন্সপেকশন এর অংশ হিসেবে গত ১৬ আগষ্ট বিএডিসির ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি দল নেত্রকোনা বিএডিসি বীজ গুদাম পরিদর্শনে যান। গুদামে ঢোকা মাত্রয় চোখে পরে বীজ সংরক্ষণের নানাবিধ অনিয়ম।তারা মনে করেন এটি বীজগোদাম তো নয় যেন পোকার বসত বাড়ি,জীবন্তপোকা লটের ধানবীজ খেয়ে শেষ করে দিয়েছে।যা আর গজাবে না।কোটি কোটি টাকার সরকারী বীজধান দুর্নীতি ও দায়িত্বে অবহেলার কারনে নষ্ট হতে চলেছে।যদিও পোকা নিধনের জন্য টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। উক্ত টাকা পোকা নিধনের কাজে ব্যবহার না করে নিজে আত্মসাৎ করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ আছে,ডিডি জয়নাল আবেদীন শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎসহ, কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার,দক্ষ-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বদলি করে দিয়ে নিজেই সমস্ত কিছু অন্যায় ভাবে ভোগ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন,আমরা তাকে সাবধান করলে,আমাদের চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দেন। বিএডিসি র উচ্চ পর্যায়ের টিম পরিদর্শন করে তার এই অসৎ কর্ম খন্ডের জন্য,কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন,কিন্তু দুর্নীতিবাজ জয়নাল আবেদীন তাদেরকে নাকি মোটা অংকের টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেবেন বলে দৃঢ়তা প্রকাশ করেন। ইতিপূর্বে জামালপুরে কর্মরত থাকা অবস্থায়ও উক্ত ঘটনাবলী করে আসছিলেন। সেজন্যই তাকে ওখান থেকে বদলি করা হয়,সেখানকার চাষীরাও তার দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
যেহেতু নেত্রকোনা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলা দেশের সিংহভাগ ধান উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা রাখে তার এ কর্মকান্ডে সরকারের ভাবমূর্তি সহ,সরকারের খাদ্য উৎপাদন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে সে একটা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।
পরিদর্শন টিমের রিপোর্টে র ভিত্তিতে গত ১৭ আগস্ট নেত্রকোনা বিএডিসি (বীউ) উপ- পরিচালক জয়নাল আবেদীনকে ব্যাখ্যা তলব করে বিএডিসি(বীউ)র প্রকল্প পরিচালক দেবদাস সাহা।
ব্যাখ্যা তলবে বলা হয়, আপনার বীজ গুদামের বিভিন্ন জায়গায় মাত্রাতিরিক্ত উড়ন্ত পোকা উপস্থিত দেখা গেছে সেই সাথে বীজের বস্তায়ও পোকার আক্রমণ পরিলক্ষিত করা হয়। বীজ কার্যক্রমে বীজ গুদামের পোকার উপস্থিতি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এছাড়া আপনার কেন্দ্রের বীজ পরীক্ষারগার পরিদর্শনে দেখা যায় যে, আউশ এবং বোরো বীজ গুদামে থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষাগারে অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষার জন্য বীজ বসানো ছিল না,অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষার জন্য যে অল্প কয়েকটি বীজ বসানো ছিল। সেগুলো পরিদর্শনের দিনে বসানো বলে মনে হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত কোন রেজিস্টার ও আপনি দেখাতে পারেননি বলে বলা হয়।
দপ্তরের বীজ সংগ্রহ কার্যক্রমের এহেন ব্যত্যয় প্রতিয়মান হওয়ার কারণে চিঠি পাওয়ার পর থেকে
আগামী ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে সুস্পষ্ট কারণসহ ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য বলা হয়।
এবিষয়ে নেত্রকোনা বিএডিসি (বীউ) উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীনে সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দায়িত্বের অবহেলা করী উপ-পরিচালক জয়নাল আবেদীনে বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে
কৃষিবান্ধব সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষাসহ
নেত্রকোনার জেলার কৃষিকে বাঁচানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।