আলিফ আরিফা গাজীপুর প্রতিনিধি:গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ প্যানেল মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই বিদেশ চলে গেছেন। গত ২১ জুন চিকিৎসার কথা বলে ৫ দিনের জন্য ছুটি নেন তিনি। কিন্তু সেই ছুটি শেষ হওয়ার এক মাস পার হলেও দেশে ফিরেননি কিরণ। নিয়ম অনুযায়ী মেয়র বা ভারপ্রাপ্ত মেয়র কোনো কারণে ছুটিতে গেলে প্যানেল মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তা করেননি ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও অফিস করছেন না বলে জানা গেছে। একটি সিটি করপোরেশনের শীর্ষ দুটি পদের কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজে নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্তের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসছেন আসাদুর রহমান কিরণ। এরইমধ্যে তার মা জায়েদা খাতুন নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে শপথও পড়িয়েছেন। কিন্তু আগের কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ না হওয়ায় তিনি দায়িত্ব নিতে পারেননি। এ অবস্থায় কিরণের দেশত্যাগ ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে গাজীপুর শহরের এক ব্যক্তি বলেন, ভারপ্রাপ্ত মেয়র থাকাকালীন অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে বিশাল অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন কিরণ। সেই টাকা বিদেশে পাচার করতে গেছেন তিনি।
এদিকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ তার সহকর্মীরা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র আবদুল আলিম মোল্লা এরইমধ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, সিটি করপোরেশনের বিধান ও নিয়ম অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত মেয়রের বিদেশ সফরকালে তার অনুপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্যানেল মেয়রকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দিয়ে যাওয়ার কথা। অজ্ঞাত কারণে তিনি কাউকে না জানিয়ে এবং তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পরিচালনার ভার কাউকে অর্পণ না করেই তিনি গোপনে দেশত্যাগ করেন। ফলে সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুপস্থিতির বিষয়টিও মন্ত্রীকে অবগত করেছেন আবদুল আলিম মোল্লা।
গাজীপুর দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন। ভারপ্রাপ্ত মেয়র দিয়ে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে এমনিতেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে পিছিয়ে রয়েছে এ সিটি করপোরেশন। মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে এসেছে কিরণের মতো অদক্ষ জনপ্রতিনিধি। এমন অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এবার কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে বিদেশে আত্মগোপনে গিয়ে সেই অদক্ষতার আরেক প্রমাণ দিয়েছেন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তারা আরও বলেন, দুদকের অনুসন্ধান করে দেথা উচিত কি পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র। এসব অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।