ডেক্স নিউজ: অভিযুক্ত শিক্ষক মহেশপুর উপজেলার ঘুগরী পান্তাপাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী সরকরের ছেলে। জানা যায়, গত জুলাই মাসে উপজেলার ১ নং সাব্দালপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মিনেচপাড়া আলহাজ্ব নওয়াব আলী খান মিসবাহুল উলুম ক্বওমী মাদরাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিং মাদ্রাসায় এই ঘটনার ভুক্তভোগী নাবালক মিনেচপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, ২০০৫ সালে আলহাজ্ব মো: লিয়াকত আলী খানের হাত ধরে উক্ত মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ভুক্তভোগীর বাবা জানান, তার ১২ বছর বয়সী ছেলে ওই মাদ্রাসার আদর্শ নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী ও আবাসিক ছাত্র। তিনি বলেন, ছেলের মাধ্যমে জানতে পারি গত ১৪ জুলাই শুক্রবার গভীর রাতে শিক্ষক মাহমুদুল হাসান হুমায়ন ঘুমন্ত অবস্থায় তার ছেলেকে বলাৎকার করেন। ঘটনার পরদিন বাচ্চাটি বাসায় এসে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানায়। পরে বিষয়টি মাদ্রাসার সভাপতি কে জানানো হলে তিনি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থী ঘটনার লোহমর্ষক বর্ণনা দেন। সে আরও জানায় সেদিন গভীর রাতে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছিলো ওই শিক্ষক। এমনকি ওই ঘটনা যদি কাউকে জানানো হয় তাহলে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেয়ার হুমকি ও দেওয়া হয়। এ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য চাইলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন ম্যানেজিং কমিটির সভার সিদ্ধান্তে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি এবং সভাপতি আমাকে যথারীতি প্রতিষ্ঠানে বহাল থেকে কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি সাদাকাত খান শাওনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঢাকায় অবস্থানকালে ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বিষয়টি আমি স্থানীয় পুলিশ ফাড়িকে অবগত করি। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে যদি ওই শিক্ষক দোষী প্রমাণিত হয় তবে তাকে চাকরিচ্যুত করা সহ আইনগত সকল ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই ঘটনার প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। শুধু তাই নয় ঘটনাটি মিথ্যা আখ্যা দিয়ে ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মাদ্রাসার সভাপতি। যে কারণে অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো বহাল তবিয়তে ওই চাকরি করছেন।ইতিপূর্বে কোটচাঁদপুর কেরাতুল কোরআন হাফেজিয়া কওমী মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত আখ সেন্টার পাড়ার ইমরান নাজির নামে এক ছাত্রের সাথে বলাৎকারের ঘটনা ঘটায় ওই শিক্ষক। এছাড়াও মহেশপুর উপজেলার পান্তাপাড়া হুসোরখালী কওমি মাদ্রাসায় হাসনাত নামে চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রের সাথে জোরপূর্বক খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ সাপেক্ষে ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম্য আদালত বসে। গ্রাম্য আদালতে মাদ্রাসা শিক্ষক হুমায়নের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় গ্রাম্য আদালতের বিচারকদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক চাকরিচ্যুত, জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়া সহ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেখানে কোরআন শিক্ষার মতো প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের জঘন্যতম ঘটনা ঘটায় ওই এলাকায় রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সঙ্কিত। স্থানীয়দের অভিযোগ ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় কেউ উচ্চবাচ্য করার সাহস পায়নি। যে কারণে এতো বড় জঘণ্য অপরাধ করার পরও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।