সরকারি আশ্রয় প্রকল্প বাড়িতে ভুয়া নোটিশ দিয়ে ঘর ছাড়া করছে মর্মে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে!!….…
এসএম রুবেল, ক্রাইম রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জঃ প্রতারণা ও দেহ ব্যবসা করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ রাজশাহীতে বাড়ি, গাড়ি আলিশান কারবার, গোপনে করেছেন ব্যাংক ব্যালেন্স। দেহব্যবসা থেকে প্রতারণার দায়ে জেলও খেটেছেন এই পতিতা টেডমার্ক| চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশপাশের জেলায় মাদক, দেহ বাণিজ্য ও প্রতারণায় গজিয়ে উঠা এই শাহানাজ ফুঁজি ? সাম্প্রতি ও বিগত সময়ের প্রতারণার শিকার ভূক্তভূগীদের অভিযোগে ফুঁজির ভয়ংকর চিত্র উঠে এসেছে তাকে ঘিরে। যা সকলের মনে প্রশ্ন জেগেছে।
খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়, পুলিশের এক কর্মকর্তার সঙ্গে,পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়াই সংসার শেষ হয়ে যায় । ক্ষোভ ও জেদে শুরু হয়, নামে বেনামে বিয়ের প্রতারণার ফাঁদ। কৌশলগতভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার যাত্রা,তারই ধারাবাহিকতায় সদর উপজেলার নয়াগোলার (২৪) বছর বয়সের এক যুবকের সঙ্গে অনৈতিক কাজে ধরা পড়ে এবং এলাকাবাসী বিয়ে দিয়ে দেয় । এখান থেকেই শুরু হয় প্রতারণার। তবে এদের প্রতারণার অন্যতম কৌশল আওয়ামী লীগের ব্যানারে নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের মানপুর শল্লা গুচ্ছগ্রামে একটি সরকারি বাড়ি পাইয়ে দেওয়ায়। এই বাড়িটিকে পুঞ্জি করে অত্র জেলার বিভিন্ন গ্রাম পর্যায়ে প্রাইভেট কার ভাড়া করে বেরিয়ে যায়, কখনো সমাজসেবা অফিসার, এসিল্যান্ড, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয়ে ব্ল্যাকমেইল করেই চলেছে এই শীর্ষ লেডি প্রতারক শাহানাজ ফুঁজি। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে পাঁচশত টাকা শুরু করে সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে দূরদূরান্ত থেকে নিয়ে আসা পতিতা-দের পরিচয় করিয়ে গোপনে এসবের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই অন্যতম প্রতারক। এবং তার আধিপত্য বিস্তারের জন্য অত্র এলাকার গুন্ডা মাস্তানদের মাসিক সাপ্তাহিক ভোজনের আয়োজন করেন, সেখানে তা বিপুল পরিমাণের অর্থ ব্যয় করেন তার অর্থ কোত্থেকে আসে তাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। এবং এসব গুন্ডা মাস্তানদের তার এই অপকর্মের সরাসরি সম্পৃক্তা রয়েছে এবং তার বিভিন্ন অপকর্মের সাহায্য প্রদান করেন তারা।
মাদকের স্বর্গরাজ্যে গড়ে তুলেছে কখনোই ভাবার মত কথা নয় শাহানাজ ফুঁজিকে নিয়ে, রাজশাহী- চাঁপাইনবাবগঞ্জের মধ্যে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে নিয়ন্ত্রিত ঢাকার কিছুটা নাইট ক্লাবে মিট হয়-সাড়া আসলেই, হিরোইনে চালান একশত গ্রামে, ত্রিশ হাজার, দুইশত গ্রামে ষাট হাজার টাকা করে ঢাকা ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিতে পারলেই এসবের বিনিময়ে বেনিফিট নিয়ে গোপনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে চলছে তার রমরমা প্রতারণার বাণিজ্য।
সাম্প্রতি সময়ে জেল থেকে বেরিয়ে আবারও শুরু করেছে প্রতারণা। বিগত সময়ে নিজেকে আ.লীগ নেত্রী পরিচয় দানকারী স্বৈরাচার সরকার থাকাকালীন দীর্ঘ বছর ধরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি,সরকারি চাকুরি ও বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে হাজারোও পরিবারের কাছ থেকে কৌশলগতভাবে বিভিন্ন পরিমাণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলো রাজশাহী বিভাগের ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার, wanted প্রতারক নামে পরিচিত শাহনাজ খাতুন ফুজি ও তার পাঁচ নম্বর স্বামী নিঝুম। টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানারকম ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দিত এ প্রতারক দম্পতি তার নিয়ন্ত্রিত ক্যাডার বাহিনী দ্বারা। এরই ধারাবাহিকতায় গত (২৫ অগাস্ট) রবিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের মানপুরশল্লা মুর্শিদা গ্রামে শাহনাজ ফুঁজির বাড়ির সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে শতাধিক ভুক্তভোগী পরিবার।
মানববন্ধন শুরু করতেই শাহনাজ ফুঁজি তার ক্যাডার বাহিনী লোকজন নিয়ে অতর্কিত হামলা ও মারধর করে ভুক্তভোগীদের উপর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সদস্যরা। তাদের উপরেও হামলা করে শাহনাজের মাসিক নিয়ন্ত্রিত ক্যাডার বাহিনী,পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রতারক শাহনাজ ফুঁজি ও তার স্বামীকে আটক করা হয়। অতঃপর সদর মডেল থানায় ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে কয়েকটি তার বিরুদ্ধে আনীত একাধিক প্রতারণার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়ায় ফুঁজি ও তার স্বামীকে ফৌজদারি আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
তবে এখানেই শেষ নয়, কারাগার থেকে জামিনে বের হয়েই আরও উগ্র হয়ে উঠেছে প্রতারক শাহনাজ ফুঁজি ও তার দলবল,আবারও শুরু করেছে প্রতারণা,লুটপাটের রাম রাজত্ব,সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নামে ভূয়া নোটিশ পাঠিয়ে ঘর ছাড়াও করছে আশ্রয় প্রকল্পে ঠায় নেওয়া স্বামী-স্ত্রী, দুজন প্রতিবন্ধীকে এই দুই প্রতিবন্ধীর মাথা গোজার ঠাঁই শেষ সম্বল টুকু কেড়ে নেওয়া হয়, গভীরে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তাড়িয়ে দিয়েছে এ প্রতারক শাহানাজ ফুঁজি। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে বেরিয়ে এসেছে আসল তার একান্ত সহযোগিতাকারী মোঃ সাইম আল মেহেদী ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি অফিস চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, তার প্রত্যক্ষ পরামর্শে ও সহযোগীর হাত ধরে কোন প্রকার সিল ও স্মারক নাম্বার ছাড়াই ভুয়া নোটিশ দিয়ে প্রতারণার ফাঁদে অনেকেই প্রতারণা শিকার । তারই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদর মডেল থানা, এসিল্যান্ড সহ স্ব স্ব দপ্তরে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও রয়েছে।
(২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ) ইং তাং সংশ্লিষ্ট সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে তথ্য পাওয়া যায় যে, সরকারি আশ্রয় প্রকল্পে দেওয়া প্রতিবন্ধী ১.আব্দুল রহিম ও ২. সাজিয়া খাতুন দুই’ প্রতিবন্ধী স্বামী-স্ত্রীকে ভূয়া নোটিশ প্রদান করে বাড়ি থেকে মারধর করে ঘরের আসবাব পত্র ঘরে থাকা টাকা লুটপাট করে সরকারি ঘর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কয়েকটি সরকারি দপ্তরে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি থানার অভিযোগ হয়েছে আরও কয়েকটি সরকারি বাড়িতে ভূয়া নোটিশ প্রদান করে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাড়ি ছাড়ার জন্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের মানপুরশল্লা মুর্শিদা গুচ্ছ গ্রামের সরকারি বাড়িতে থাকা অনেকেই এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন। শাহনাজ ফুঁজি ও তার ক্যাডার বাহিনীর হাতে। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়ে । এভাবেই তার রমরমা অনৈতিক দেহ ব্যবসা ও মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মি. মোঃ আব্দুস সামাদ বলেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রকৃত অপরাধী কে শাস্তির আওতায় আনার জন্য কাজ করছি এবং অপরাধের সত্যতা প্রমাণিত হলে দলিল বাতিল পূর্বক যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয় নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. তাছমিনা খাতুন এর সরণাপন্ন হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে এবং তা তদন্তও চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পেলে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।
একই বিষয়ে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম জাকারিয়া বলেন,তার বিরুদ্ধে কয়েকটি প্রতারণার লিখিত অভিযোগ রয়েছে আমাদের কাছে এবং এবিষটি যেহেতু সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সেহেতু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে আদেশ দিবেন তা আমরা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করবো বলে জানান তিনি।