শারমিন আক্তার : সাংবাদিক পরিচয়ে চট্রগ্রাম ও রাজধানীতে প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে জুনায়েদ হাসান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কথিত ওই সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকার ভুয়া আইডি কার্ড এবং ভুয়া অনলাইন চ্যানেলের নাম ব্যবহার করে সরকারী চাকরী, বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানোর নামে প্রতারনা এবং একাধিক ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করেন। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেকে ‘চট্রলা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি এবং একাধিক পত্রিকার ক্রাইম সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।
এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, প্রেস কাউন্সিলসহ একাধিক দপ্তরে অভিযোগ দায়ের এবং জুলেখা জুঁই নামের এক ভুক্তভোগী মতিঝিল ও গাজীপুর থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জুলেখা জুঁই অভিযোগ করেন , চট্টগ্রামের জুনায়েদ হাসান ভুঁইফোড় নামসর্বস্ব পত্রিকা এবং অনলাইন টিভির কাজ করেন। তার সাথে পরিচয় হওয়ার পর চট্টগ্রাম থেকে বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানোর নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভুক্তভোগী প্রতিবেদক কে বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামীর প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নামসর্বস্ব একটি পত্রিকায় কথিত সাংবাদিক জুনায়েদ হাসান সংবাদ প্রকাশ করেন। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর পালিয়ে চট্টগ্রামে চলে যায়। আবার আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন না হয় আমার ছবি এডিট করে ইন্টারনেট এ প্রকাশ করে দিবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই চক্রটি বিভিন্ন সময় সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে চট্টগ্রাম ও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রায় সময়েই এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং চট্টগ্রাম থেকে ইয়াবা এনে গাজীপুর এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে।
এরই মাঝে জুনায়েদ হাসানের নামে এক ভুক্তভোগীর আইনি পদক্ষেপের বিষয় আঁচ করতে পেরে বিভিন্ন নাটক সাজাতে থাকে এবং গাজীপুরের কথিত স্ত্রীকে রেখে চট্টগ্রামে চলে যায়। সেখানে নিজেকে ক্রাইম সাংবাদিক পরিচয় দেন। বিভিন্ন জনের অভিযোগের পর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আটক করেন। পরবর্তীতে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পায়।
এডিশনাল এসপি আজিজ শিকদার বলেন, চাঁদাবাজি ও প্রতারনার বিষয়ে থানায় দুটি জিডি হয়েছে। একজন নারী বাদী হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
অভিযোগের বিষয়ে জুনায়েদ হাসান বলেন,আমি চট্রলা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি এবং আমার একটা অনলাইন পত্রিকা আছে। আমি নিজেই মালিক। সরকারী অনুমোদন আছে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমোদন নেই, অনলাইনের অনুমোদন লাগে না। সংগঠনের অনুমোদন আছে।
চট্টগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক আজহারুল ইসলাম জানান, তার অনলাইন টিভি ভুয়া,সেও তো ভুয়া। কিছুদিন আগে থানায় মাদক কারবারি ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে আটক হোন। পরবর্তীতে মুছলেখা দিয়ে ছাড়া পেয়ে আবারও ইয়াবা কারবারিদের শেল্টার দেওয়া শুরু করছে। ছেলে ভাল না।
সাংবাদিক মুবিন জানান, জুনায়েদ হাসান আমাদের বাসায় কাজ করতো হঠাৎ দেখি চট্রলা টিভির পরিচয়পত্র গলায় দিয়ে সাংবাদিক হয়ে গেছে।
গাজীপুরের এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, জুনায়েদ হাসান আমাকে ও আমার দুই বোনকে জর্ডানে পাঠানোর কথা বলে তিন লাখ টাকা নেন ।
আমাকে বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম আগ্রাবাদে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে রাখে। সেখানে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণে করেছে। মান সম্মান এর ভয়ে কাউকে বলিনি। আমি তার বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আইনী ব্যবস্থা নিব।