স্টাফ রিপোর্টার: গাজীপুরের কাশিমপুরে আজ শহীদ ফরহাদ হোসেন খান দিবস পালিত হয়েছে,১৯৭১ সালের ১৫ ই ডিসেম্বর আজকের এইদিনে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সরাসরি যুদ্ধে শহীদ হন ফরহাদ হোসেন খান ৷ তারপর থেকে তার পরিবারসহ এলাকাবাসী এই দিনটিকে স্বরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর এ দিবসটি পালন করে আসছে। শহীদ ফরহাদ হোসেন খান দিবস উপলক্ষে আজ শহীদের কবর জিয়ারত ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ৷ এক সময়ের সাবেক সাভার থানার কাশিমপুর ইউনিয়নের জরুন নিবাসী মমিন নেওয়াজ খানের ৭ ছেলের মধ্যে ৪ নাম্বার ছেলে বীরমুক্তিযোদ্ধা আরফান আলী খান খাইলকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পাস করে উচ্চ শিক্ষার জন্য পশ্চিম পাকিস্থানে যান ৷ সেখানে এইচ এস সি পাস করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন ৷ একদিন মায়ের চিঠি পেয়ে পশ্চিম পাকিস্থান থেকে পর্ব পাকিস্তান বাড়ীতে ছুটিতে আসেন ৷ তারপর ২৩/০২/১৯৭১ ইং তারিখে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিয়ে করেন ৷ তারপর দেশের পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে ৷ ৭ ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষন শুনে দেশের মায়ায় পশ্চিম পাকিস্থানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং বর্তমান কাশিমপুর কোনাবাড়ী ইয়ারপুরসহ বিভিন্ন এলাকার যুবকদের’কে দেশের জন্য যুদ্ধে লড়াই করে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন তিনি ৷ এভাবে আরফান আলী খান প্রায় ছোট বড় ১৭টি দল’কে ভারতের আগারগাঁও যুদ্ধ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়ে যান এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের’কে নিয়ে ছয়দানা আমবাগ জয়ের টেকসহ বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেন ৷ তার সাথে তার সহোদর দুই ভাই মোঃ ফরহাদ হোসেন খান ও মোঃ খোরশেদ আলম খানও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন ৷ এভাবে বিভিন্ন এলাকায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন ৷ এভাবে দীর্ঘ দিন পরিবার থেকে দুরে থাকেন তিনি ৷ যুদ্ধ প্রায় শেষের দিকে ১৫ ই ডিসেম্বর ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন খান কে কড্ডা যুদ্ধের ময়দান থেকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন ৷ পথিমধ্যে ফরহাদ হোসেন খান খবর পান বাগবাড়ী এলাকায় পাকহানাদার বাহিনী আক্রমণ করেছে ৷ তাই তিনি বাড়ীতে না এসে সুরাবাড়ী রাইসমিল ব্রীজের এপার থেকে পাকহানাদার বাহিনী দেখতে পেয়ে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে একাই পাকহানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু করেন এবং বীরবিক্রমের সাথে একাই যুদ্ধ চালিয়ে যান কিন্তু পুরো একটি ব্যাটালিয়ানের সাথে একাই গোলাগুলি করে বেশীক্ষন টিকতে পারেননি ক্লান্ত হয়ে হঠাৎ পাকহানাদার বাহিনীর ছোড়া একটি বুলেট এসে তার বুকের বামপাশে লাগে ৷ ফরহাদ হোসেন খান মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ৷ তারপর আরো তিন তিনটি বুলেট তার দেহ ভেদ করেন ৷ এরপর তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৷ তারপরের দিন দেশ স্বাধীন হয় কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়া দেখে যেতে পারেনি ফরহাদ হোসেন খান ৷ গাজীপুর সদর উপজেলার কমান্ডার বাগবাড়ী নিবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কফিল উদ্দিন বলেন, আমরা এক সাথেই যুদ্ধ করতেছিলাম৷ যুদ্ধ প্রায় শেষের দিকে তাই আরফান ভাই ফরহাদ হোসেন’কে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন ৷ কিন্তু পরে খবর পাই ফরহাদ বাড়ীতে না যেয়ে সুরাবাড়ী রাইস মেল ব্রীজের এই পার পাকহানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধে শহীদ হয়। শহীদ ফরহাদ হোসেন খানের ছোট ভাই সাবেক কাশিমপুর থানা যুবলীগ এর সভাপতি মোঃ বেলায়েত হোসেন খান বলেন। আমরা স্বাধীন দেশ পেলেও ফিরে পাইনি আমার সহোদর ভাইকে শহীদ পরিবারের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আরফান আলী খান এর ছেলে খোলা নিউজ বিডি’র সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আরফান আলী খান ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মোঃ আরিফুল ইসলাম খান শাহীন বলেন,আমরা প্রতি বছর ১৫ ই ডিসেম্বর শহীদ ফরহাদ হোসেন খান দিবস পালন করে আসছি ৷ আমার চাচাসহ সকল শহীদদের জন্য দোয়া মাহফিল এর আয়োজন করে আসছি সেই থেকেই।